Nineteen years of marriage the brutal reality of Rabindranath and Mrinalinis relationship
ঊনিশ বছরের বিবাহে ছত্রিশটি চিঠি রবীন্দ্রনাথ-মৃণালিনীর সম্পর্কের নির্মম বাস্তবতা | Thirty-six letters in nineteen years of marriage the brutal reality of Rabindranath and Mrinalini's relationship
![]() |
Rabibdranath and Mrinalini |
রবীন্দ্রনাথের দাম্পত্যজীবন ছিল ঊনিশ বছরের। স্ত্রী মৃণালিনীর বিয়ে হয়েছিল দশ বছর বয়সে। বারো বছর বয়সে ১৮৮৬ সালে প্রথম, ৮৮ সালে দ্বিতীয়, ৯১ সালে তৃতীয়, ৯৩ সালে চতুর্থ এবং ১৮৯৪ সালের শেষ মাসে তাঁদের শেষ সন্তানের জন্ম হয়েছিল। পাঁচ সন্তানের জননী হয়ে উঠতেই মৃণালিনীর বিবাহিত জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় পার হয়ে গিয়েছিল।
কাদম্বরী যখন পঁচিশ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেছিলেন, রবীন্দ্রনাথের বয়স তখন ছিল তেইশ। উভয়ের প্রতি উভয়ের প্রীতি-প্রেম-ভালোবাসা-বন্ধুত্ব যে খুব নিবিড় এবং গভীর ছিল তাতে তো কারো কোনও সংশয় নেই। রবীন্দ্রনাথও সারা জীবনে সে ভালোবাসা স্বীকার করতে কখনও কুণ্ঠিত হননি।
বিবাহের বছরেই ‘ছবি ও গান’ কাব্যগ্রন্থটি তিনি উৎসর্গ করেছিলেন কাদম্বরীকে। তাঁর বিবাহের চার মাস পরে, কাদম্বরীর মৃত্যুর দশ দিন পরে, তাঁর নাট্যকাব্য - ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’ তিনি উৎসর্গ করেছিলেন কাদম্বরীকেই। সেই গ্রন্থের উৎসর্গপত্রে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘তোমাকে দিলাম।’’ এর পরের মাসে ‘শৈশব সঙ্গীত’ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল; সেটিও তিনি উৎসর্গ করেছিলেন ওই বৌঠানকেই। More articale
সেই গ্রন্থের উৎসর্গপত্রে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘এ কবিতাগুলিও তোমাকে দিলাম। বহুকাল হইল, তোমার কাছে বসিয়াই লিখিতাম, তোমাকেই শুনাইতাম। সেইসমস্ত স্নেহের স্মৃতি ইহাদের মধ্যে বিরাজ করিতেছে। তাই মনে হইতেছে তুমি যেখানেই থাক না কেন, এ লেখাগুলি তোমার চোখে পড়িবেই।’’
রবীন্দ্রনাথ যখন এই কথাগুলি তাঁর পঞ্চবিংশতি বর্ষীয়া সদ্য লোকান্তরিতা প্রিয় বৌঠানের উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন, তখন কবিপত্নী মৃণালিনীর বয়স ছিল দশ বছর দু’মাস। একদিন যে দশ বছরের বালিকাকে রবীন্দ্রনাথ বন্ধুরূপে পেয়েছিলেন, তখন কবির নিজের বয়স ছিল আট। আর আজ যে দশ বছরের বালিকাটিকে কবি তাঁর বিবাহিত স্ত্রীরূপে দেখেছিলেন, সেই রবীন্দ্রনাথ তখন ছিলেন তেইশ বছর বয়স্ক এক পূর্ণ যুবক, এক বিখ্যাত সাহিত্যিক।
বাংলার সাহিত্যসমাজে সেই মুহূর্তে ‘বঙ্কিমচন্দ্র’র পরেই ছিল তাঁর প্রতিষ্ঠা। একদিকে বালিকাবধূ, একদিকে বিয়ের ক’মাস পরেই বৌঠানের আকস্মিক আত্মহনন, আর একদিকে রবীন্দ্রনাথ-মৃণালিনীর বয়সের বিস্তর ব্যবধান মৃণালিনী-রবীন্দ্রনাথের দাম্পত্য প্রেমকে সহজ সুন্দর করে গড়ে উঠতে সাহায্য করেনি।
ঊনিশ বছরের দাম্পত্যজীবনে মৃণালিনী রবীন্দ্রনাথকে যতগুলি চিঠি লিখেছিলেন, বিস্ময়ের কথা তাঁর লেখা একখানি চিঠিও রক্ষিত হয়নি কবির সংগ্রহে। তবে মৃণালিনী আমৃত্যু নিজের সঞ্চয়ে যত্ন করে লুকিয়ে রেখে গিয়েছিলেন বলে, স্ত্রীকে লেখা রবীন্দ্রনাথের ছত্রিশটি চিঠি রবীন্দ্র গবেষকরা সৌভাগ্যক্রমে উদ্ধার করতে পেরেছিলেন।
স্ত্রীকে লেখা রবীন্দ্রনাথের প্রথম চিঠিটি ছিল ১৮৯০ সালের জানুয়ারি মাসের। সেটি ‘সাজাদপুর’ থেকে লেখা হয়েছিল। ১৮৯০ থেকে ১৯০২; বারো বছরে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন ছত্রিশটি চিঠি। অর্থাৎ গড়ে বছরে তিনটি করে চিঠি তিনি তাঁর স্ত্রীর জন্য বরাদ্দ করেছিলেন। যদিও রবীন্দ্রনাথ বছরে প্রায় কত সময়ই তো দেশ-বিদেশে ভ্রমণে কাটিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁর মনের মতো কত নারীকে কি কম চিঠি লিখেছিলেন?
দেড়শো-দুশো থেকে চারশো, এমনকী পাঁচশতাধিক পর্যন্ত। অপর দিকে তাঁর স্ত্রীকে লেখা যতগুলি চিঠি এখনও পর্যন্ত রবীন্দ্র গবেষকরা পেয়েছেন, সেগুলোর অধিকাংশই মূলতঃ সাংসারিক বার্তাবিনিময়ের প্রয়োজনে লেখা হয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে তাঁর নিজের তাগিদে আবেগে আকুলতায় লেখা তেমন চিঠি কোথায়?
কাদম্বরীদেবী সুন্দরী ছিলেন; বলা যায় দ্বিপ্রহর-সন্ধ্যা প্রতিদিনের দেবর-বৌঠানের আলাপে কবির কাছে কাদম্বরী ছিলেন ‘সাহিত্যচর্চায় সরস্বতী’।
কাদম্বরীর মৃত্যুর পরে বিবাহিত রবীন্দ্রনাথ প্রবলভাবে আকৃষ্ট হয়েছিলেন আর এক অসামান্যা বিদুষী সুন্দরীর প্রতি। তিনি ছিলেন তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রী ‘ইন্দিরা’। রবীন্দ্রনাথের চেয়ে মৃণালিনী ছিলেন বারো বছরের ছোট। একজনকে ভুলতে গেলে আর একজনকে পাওয়ার দরকার হয়েছিল রবীন্দ্রনাথের। তাই কাদম্বরীকে ভোলার জন্য রবীন্দ্রনাথের প্রয়োজন হয়েছিল তাঁর স্ত্রী মৃণালিনীকে নয়, তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রী ‘ইন্দিরা’কে। একজন যুবক যে একটি বালিকাকে কী গভীর স্নেহ ভালোবাসা প্রশ্রয় ও অনুকূলতার যত্নে ভরিয়ে রাখতে পারেন, সেটার উজ্জ্বল প্রমাণ পাওয়া যায় ইন্দিরা-রবীন্দ্রের এক আশ্চর্য সুন্দর অসামান্য সম্পর্কের মধ্যে।
রবীন্দ্রনাথের কোনও কাব্য কবিতায় নাটকে গানে প্রবন্ধে মৃণালিনীর উল্লেখমাত্র পাওয়া যায় না। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর প্রেম, স্বামীর ভালোবাসার গভীরতা ও তীব্রতার ওপরেই স্বামীর হৃদয়ের অন্তঃপুরে লোকান্তরিতা স্ত্রীর স্মৃতি অম্লান থাকবে কি না সেটা নির্ভর করে। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথের মনের মধ্যে তাঁর স্ত্রীর স্মৃতি তেমনভাবে আর জাগ্রত ছিল না। তবে স্ত্রীর মৃত্যুর অব্যবহিত পরে কবির কলম থেকে যে শোকগাথা নির্ঝরিত হয়েছিল, সেটাও তো মিথ্যা নয়।
সেই পঁচিশটি তাৎক্ষণিক শোকগাথায় কবির যে দাম্পত্যজীবনের ছবিটি ধরা পড়েছে সেখানেও একটা বিষণ্ণতা, শূন্যতা, কোথায় যেন একটা ব্যবধানের ফাঁক ধরা পড়ে। বসন্ত তাঁদের জীবনে ফাল্গুনের বাতাসে এসে এসে ফিরে গিয়েছিল; কিন্তু তাঁদের দু’জনের কেউই বুঝি সেই বসন্তে তেমন ভাবে সাড়া দেননি। তাই কোনও কোনও কবিতায় যেন কবির অপরাধবোধের আভাস পাওয়া যায়। কোথাও কোথাও তাঁর নিজেকে স্ত্রীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী বলে মনে হয়। সামগ্রিকভাবে মৃণালিনী রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী হয়েও সংসারে তেমনভাবে সুখী ও আহ্লাদিত ছিলেন না, ‘স্মরণ’ কবিতার ছত্রে ছত্রে বর্ণে বর্ণে সেটা উপলব্ধি করা যায়। Home
‘পরিচয়’ কবিতাটিতে কি মৃত স্ত্রীর প্রতি রবীন্দ্রনাথের অপরাধবোধের স্বীকারোক্তি ধরা পড়ে না?
মৃণালিনীর মৃত্যুর এক মাসের মধ্যে কবি লিখেছিলেন ‘কথা’ শীর্ষক কবিতাটি। এই সব কবিতাই বলে দেয় যে, মৃণালিনী বিবাহসূত্রে রবীন্দ্রনাথের সহধর্মিণী ছিলেন ঠিকই, কিন্তু প্রকৃত অর্থে তিনি কবির প্রাণের সহচরী সঙ্গিনী বা হৃদয়ের বন্ধু ছিলেন না। কোনওভাবেই শেষ পর্যন্ত বলা যায় না যে, মৃণালিনী রবীন্দ্রনাথের ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ছিলেন।
দু’জনের মধ্যে মনের তেমন সংযোগ, পরস্পরের প্রতি প্রেমের সেই তীব্রতা, তাঁদের ঊনিশ বছরের দ্বৈত জীবনে কোনও দিনই তেমনভাবে গড়ে উঠতে পারেনি। তাই ‘কথা’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথকে স্বীকার করে বলতেই হয়েছিল,
‘‘তোমার সকল কথা বল নাই, পার নি বলিতে -
আপনারে খর্ব করি রেখেছিলে তুমি, হে লজ্জিতে,
যতদিন ছিলে হেথা। হৃদয়ের গূঢ় আশাগুলি -
যখন চাহিত তারা কাঁদিয়া উঠিতে কণ্ঠ তুলি,
তর্জনী-ইঙ্গিতে তুমি গোপনে করিতে সাবধান
ব্যাকুল সংকোচবশে, পাছে ভুলে পায় অপমান।
আপনার অধিকার নীরবে নির্মম নিজ করে
রেখেছিলে সংসারে সবার পশ্চাতে হেলাভরে।’’
এই কবিতা তো বঙ্গদেশের চিরকালের দুঃখিনী বিবাহিতা, বঞ্চিতা নারীর বিষণ্ণ বেদনার বাকরুদ্ধ ইতিকথা।
মৃণালিনী বিশ্বযাত্রী রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী হয়েও কখনও তাঁর বিদেশ যাত্রার সৌভাগ্য ঘটেনি। পাঁচটি ছেলেমেয়েকে নিয়ে তিনি কবির সংসারটি প্রাণপণে আগলে রেখেছিলেন। রন্ধনে, আতিথেয়তায় কবির তিনি অতিথিদের মুগ্ধ করেছিলেন। তিনি ইংরেজি ফরাসি জানতেন না। তিনি ছিলেন কবির সেই সত্যকারের ‘সাধারণ মেয়ে’।
অথচ সেই সাধারণ মেয়েটিকে কবির ‘প্রাণাধিক’ অসাধারণ ভাইঝির সম্মুখে বস্তুতপক্ষে কুণ্ঠিত লজ্জিত হয়েই দিন কাটাতে হয়েছিল। যেভাবে রবীন্দ্রনাথ অসামান্যা ‘ইন্দিরা’কে সমাদর করেছিলেন, ভালোবেসেছিলেন, সেটার স্বল্পাংশও কি মৃণালিনী তাঁর কাছ থেকে পেয়েছিলেন?
ইন্দিরা-রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে মৃণালিনীর মধ্যে যে কোনও অভিমান থাকতে পারে - দুটি সমবয়সি মেয়ের শিক্ষা-সংস্কৃতিগত সেই যে বিশাল ফারাক - এই ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথ কোনওদিন মৃণালিনীর মনটি ভেবে দেখার চেষ্টা করেননি। বিবাহের পর শ্বশুরবাড়িতে এসে মৃণালিনী জেনেছিলেন, দেখেছিলেন যে তাঁর স্বামীর লেখা কাব্যগ্রন্থ ‘ভগ্নহৃদয়’ কাদম্বরীকে উৎসর্গ হয়ে গিয়েছে; এমনকি তাঁদের বিবাহের মাত্র সাত মাস আগে, তাঁরই সমবয়সী একটি মেয়েকে পত্র-কবিতা লিখে স্বামী তাঁর ‘প্রভাত সঙ্গীত’ কাব্যগ্রন্থ উৎসর্গ (‘‘স্নেহ উপহার/শ্রীমতী ইন্দিরা/প্রাণাধিকাসু’’) করেছিলেনা।
মৃণালিনী দেখেছিলেন যে, কাদম্বরীকে উৎসর্গপর্ব সমাপ্তির পরে উৎসর্গ শুরু হয়েছিল ইন্দিরার বাবাকে, ইন্দিরার মাকে। এমনকি ইন্দিরার দাদাকেও উৎসর্গ করা হয়েছিল, যিনি বয়সে ইন্দিরা বা মৃণালিনীর চেয়ে মাত্র দেড় বছরের বড় ছিলেন।
বেলা’র জন্মের প্রায় এক বছরের মাথায় রবীন্দ্রনাথ তাঁর পরিবারের অনেক মহিলাকে নিয়ে পূজাবকাশে ‘দার্জিলিং’ গিয়েছিলেন। সেবার তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী এবং এগারো মাসের কন্যা ‘বেলা’। এছাড়া তাঁর বড়দিদি, ন’দিদি সবাই ছিলেন। ন’দিদির পঞ্চদশী কন্যা ‘সরলা’ ছিলেন। স্টিমার ও ট্রেন যাত্রার বিস্তৃত বিবরণ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ সেবার ইন্দিরাকে যে চিঠি দিয়েছিলেন তাতে দেখা যায় যে তাতে তাঁর দিদিদের কথা আছে। ‘সরলা’র ‘উচ্ছ্বাস-উক্তি’ অনেকটা উদ্ধৃত, তাঁর কন্যা ‘বেলি’র কথা আছে - অন্য সকলের কথা আছে; কেবল কন্যার মায়ের কথাটি সম্পূর্ণ অনুল্লেখিত পাওয়া যায়।
মৃণালিনীর হৃদয়ের মধ্যেও কি সেদিন কোনও আবেগ আকুলতা উচ্ছ্বাস উদ্বেলিত হয়নি? হয়তো হয়েছিল, হয়তো হয়নি। রবীন্দ্রনাথের ইন্দিরাকে লেখা চিঠিতে তার কোনও উল্লেখ পাওয়া যায় না। সেই যে ইন্দিরাকে রবীন্দ্রনাথের চিঠি লেখা শুরু হয়েছিল, ‘ছিন্নপত্রাবলী’র সেটাই ছিল প্রথম চিঠি। ১৮৮৭ সালের সেপ্টেম্বরে সেই চিঠি লেখার শুরু হয়েছিল, ১৮৯৫ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়েছিল। মোট চিঠির সংখ্যা দুশো বাহান্ন। আট বছরে আড়াইশো চিঠি। অপরদিকে রবীন্দ্রনাথকে লেখা ইন্দিরার চিঠিও হয়তো সমতুল্য। অন্যদিকে ঊনিশ বছরের দাম্পত্য জীবনে নিজের স্ত্রীকে লেখা রবীন্দ্রের চিঠির সংখ্যা ছত্রিশ! আর স্বামীকে লেখা স্ত্রীর পত্র? সেগুলোর একখানিও রক্ষিত হয়নি।
যিনি আমাদের খুব প্রিয়জন হন তাঁর জন্মমৃত্যুর তারিখটা আমরা ভুলি না। তাঁর লোকান্তরিতা স্ত্রীর কল্যাণী স্মৃতি কতদিন কবি রক্ষা করতে পেরেছিলেন? না। খুব একটা বেশি দিন নয়। স্মৃতি ম্লান হয় প্রকৃতির নিয়মে, এবং অবশ্যই মানুষ ভেদে। বাঙালীর পক্ষে কি ‘২২শে শ্রাবণ’ ভুলে যাওয়া সম্ভব? কখনই না।
কিন্তু রবীন্দ্রনাথ, অবিশ্বাস্য হলেও, পরবর্তী দশ বছর যেতে না যেতেই মৃণালিনীর লোকান্তরের তারিখটি সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়েছিলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর আট বছরের মাথায়, ‘পদ্মিনীমোহন নিয়োগী’কে ২৮শে ভাদ্র ১৩১৭ বঙ্গাব্দে, কবি এক দীর্ঘ পত্রে ‘আমার জীবন ও রচনার ইতিহাস’ লিখতে গিয়ে লিখেছিলেন, ‘‘বিদ্যালয় দুই এক বৎসর চলার পর ১৩০৭ সালে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়।’’ এখনও পর্যন্ত সব ‘রবীন্দ্র-রচনাবলি’তে সেই চিঠি ছাপা হয়েছে। হতে তো পারে যে সেটা ছাপার ভুল। নিজের জীবনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লিখতে গিয়ে কবি নিজের স্ত্রীর মৃত্যুর তারিখটাই ভুল করবেন; সেই ভুলের ফলে আসল মৃত্যুর দু’বছর আগেই পত্রে তাঁর মৃত্যু ঘটবে - এ কথা বিশ্বাস হয় না।
কিন্তু রচনাবলিতে যখন, সমগ্র চিঠির কবির হস্তাক্ষরের প্রতিলিপি চিত্রে, ১৩০৭ বঙ্গাব্দ দেখতে পাওয়া যায় তখন কবির সেই মর্মান্তিক বিস্মৃতিও মেনে নিতে হয়।
More article :
English translate 👉
Rabindranath's married life was nineteen years. His wife Mrinalini was married when he was ten. At the age of twelve, their first child was born in 1886, the second in 1888, the third in 1991, the fourth in 1993 and their last child in the last month of 1894. By the time Mrinalini became the mother of five children, more than half of her married life had passed.
When Kadambari committed suicide at the age of twenty-five, Rabindranath was twenty-three. There is no doubt that their love, affection, affection and friendship for both of them were very close and deep. Rabindranath never hesitated to confess that love throughout his life.
In the year of his marriage, he dedicated the poetry collection 'Pictures and Songs' to Kadambari. Four months after his marriage, ten days after Kadambari's death, he dedicated his dramatic poem - 'Praktir Pratishodh' to Kadambari. In the dedication of that book, he wrote, “I give it to you.” The following month, the poetry collection ‘Childhood Music’ was published; he also dedicated it to that Bouthan.
In the dedication of that book, he wrote, “I give these poems to you too. It has been a long time since I wrote them sitting next to you, and I used to listen to them to you. The memories of all that affection are present in them. So it seems that no matter where you are, these writings will be read by your eyes.”
When Rabindranath wrote these words to his beloved Bouthan, who had just passed away in his twenties, the poet’s wife Mrinalini was ten years and two months old. One day, the ten-year-old girl whom Rabindranath had met as a friend was eight years old when the poet himself was. And the ten-year-old girl whom the poet now saw as his married wife, Rabindranath was then a full-grown young man of twenty-three years, a famous writer.
At that time, he was established in the Bengali literary community after 'Bankim Chandra'. On the one hand, the child bride, on the other hand, Bouthan's sudden suicide a few months after marriage, and on the other hand, the huge age gap between Rabindranath and Mrinalini did not help Rabindranath's marital love to develop easily and beautifully.
Of all the letters that Mrinalini wrote to Rabindranath during their nineteen years of married life, surprisingly, not a single letter written by him was preserved in the poet's collection. However, as Mrinalini had carefully hidden it in her savings until her death, Rabindranath researchers were fortunately able to recover thirty-six letters written by Rabindranath to his wife.
Rabindranath's first letter to his wife was dated January 1890. It was written from 'Sajadpur'. From 1890 to 1902; Rabindranath wrote thirty-six letters in twelve years. That is, on average, he allocated three letters a year to his wife. Although Rabindranath spent almost as much time a year traveling in the country and abroad. Did Rabindranath write fewer letters to the women he liked?
From one and a half to two hundred to four hundred, even more than five hundred. On the other hand, most of the letters Rabindranath researchers have found to his wife were written primarily for the purpose of exchanging worldly messages. Where among them is there a letter written with such passion and longing on his own impulse?
Kadambari Devi was beautiful; it can be said that Kadambari was the 'Saraswati of literary pursuits' to the poet in the daily afternoon and evening conversations with his brother-in-law and his brother-in-law.
Recommended page :
Comments
Post a Comment